ঘরের লক্ষী

 ঘরের লক্ষী

খাদিজা বেগম 


তোমার ঘরের লক্ষী হতে এসে আমি, 

হয়ে গেলাম তোমার ঘরের এক দাসী।

সকলের মন জয় করতে গিয়ে আমি,

 আজ নিজের প্রতি নিজেই বড় উদাসী।


তৈরি করতে গিয়ে আমি গোলাকার রুটি,

 আয়ত্ত করতে গিয়ে তরকারির স্বাদ।

ভুলে গেছি আমি চুল বাঁধতে আমার 

বারবার পুড়িয়েছি যত্নে রাখা দুই হাত।


তবুও হয়ে গেছে রুটির র টুকরা বাঁকা,

শাকসবজিতে একটুখানি লবণ কম।

দেখনা মন্দ কথা শোনাতে কেউ ছাড়ে না

 বাবা মাকেও সোনায় কথা নানা রকম।


শত কাজের মাঝে হলে দুই একটা টি ভুল 

এই সংসারে কেউ নেই তাহা করে দিবে ক্ষমা,

প্রয়োজন ছাড়া সেও তো কাছে ডাকে না 

বলে না একটু কাছে থেকো হে প্রিয়তমা।


তাই মাঝে মাঝে মনে হয় সবাই আমার

 প্রিয় হলেও আমি যে শুধুই প্রয়োজন,

তাই কেউ বোঝেনা আমায় ভুল খোঁজে তারা

নানা কথার আঘাতে ক্ষত করে মন।


আজানের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে উঠে আমি

কাজে-কর্মে ব্যস্ততার মাঝে রাত জাগি,

তবুও তো পান থেকে চুন খসলেই সেও 

তেরে এসে হুংকারে ছেড়ে কি করো তুই মাগি?


সবার কাজের থাকে সময়সীমা আরও

থাকে বেতন-বোনাস, ভাতা থাকে ছুটি,

আমার কাজের ভুল, ত্রুটি ,দোষ ধরে

তেরে এসে দুই হাতে সে টিপে ধরে টুঁটি।


সারাদিন সবার সেবা করে রাতে নাই

 তাহারা বিছানাতে আমার একটু বিশ্রাম,

মাঝে মাঝে নিজেকে লাগে নিজের কাছে

 অচে না কিংবা মূল্যহীন যার নাই দাম।


ভুলে গেছি আমি আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছা 

তাই আমি করে যাই অন্যেরা চায় যা, 

আমি যেন অন্যদের কেনা দাস-দাসী

 ব্যক্তিত্বহীন হয়ে খুঁজছি নিজের সত্তা।


মাঝে মাঝে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়

 মনে হয় আত্মহত্যা করে আমি বাঁচি,

নিজেকে খুঁজে। পাইনা সত্যি কি আমি

মরে গেছি নাকি মরার মতন আছি?

Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানী আর মূর্খ

জীবন নামের বৃক্ষ

কুমন্ত্রণা দেয়া শয়তান