বাসনার বাসর
একদা এক বর বাসর ঘরে গিয়ে,
বৌ, বৌ তোমার চরণ দুটি দাও এগিয়ে।
চমকে গিয়ে বললো বৌ পাগল হলে নাকি?
আরও কিযে বলতে লাগলো অন্যদের ডাকি।
এমন সময় বরে চেপে ধরল মুখ,
জড়াজড়ি করে দু'জনেই লাল টুকটুক।
বউ ভাবে পাগল আর বর ভাবে পাগলি,
ধরলাম না ছুঁই লাম না কেন এতো চিল্লাচিল্লি?
কতো যে প্রশ্ন করে বরে মুখ ছাড়ে না,
তাই তো বউ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না।
একটা সময় ক্লান্ত হয়ে দু'জনেই চুপ,
চেয়ে দেখে একে অন্যের মায়াবী রুপ।
তখনি হাত সরে ঐ রুপে মুগ্ধ হয়ে,
ফের চিৎকার করে বৌ পাগলের ভয়ে।
তড়িগড়ি করে বরেয ওড়না দিয়ে,
চঞ্চল বৌ টা সামলে নিলো মুখ বেঁধে নিয়ে।
তবুও বৌ দৌড়ায় খাট থেকে লাফিয়ে,
বর টাও তার পিছনে পড়লো ঝাঁপিয়ে ।
দুই হাত জোড় করে বলে দরজায় দাঁড়িয়ে,
আজ নয় এই রাতে কাল যেও তুমি বেড়িয়ে।
বৌ কিছুতেই মানতে চায় না বরের কথা,
মনে মনে বলে এই সময়টা যায় অযথা।
কষ্ট নিয়ে বউ কান্দে যেন ফান্দে পরিয়া,
সাথে কন্দে বড়ে কেনো করিয়াছি বিয়া।
তারা একে কান্দে অন্যের দিকে চাহিয়া,
বরে আটকালো দৃষ্টি রাঙা চরণে গিয়া।
যবে চরণ পানে বারালো দুটি হাত,
না, না, চরণ ছুইয়ো না হবে অপরাধ।
এই বলিয়া বৌটা করে ফের ছোটাছুটি,
তাই দেখিয়া বরে হেসে হেসে কুটিকুটি।
ও গো কেন তুমি পালিয়ে যাও বারে বার?
ও প্রিয়তমা বলে দাও এই প্রশ্নের উত্তর।
বৌ তখন শান্তশিষ্ট কন্ঠ নিয়ে বলে,
পাগল,পাগল হলেও ঠিক আছো তালে।
পাগলী আমায় বলে আমি নাকি পাগল?
মনে হচ্ছে কোথায় যেনো হলো গন্ডগোল।
এই বলিয়া গিয়া বৌ টাকে জড়িয়ে ধরে,
আবারো বৌ ধীরে ধীরে বর থেকে সরে।
রাতভর ছিলাম তোমার পিছনে পড়ে,
সামনে নিলেনা তুমি একটু আদর করে।
আর ছুটবো না তো আমি তোমার পিছনে,
এই বলে জল ছেড়ে দিলো দুটি নয়নে।
আমার অনেক আশা ছিল মনে মনে
পরাবো নুপুর নয়া বৌ এর চরণে।
তার পরে বলবো কথা মনে যতো আছে,
একটি বারো যেতে দিলে না তোমার কাছে ।
এই বলে রেগেমেগে নুপুর ফেলে দিলো,
বৌ টা তখন নুপুর দুটো তুলে নিলো।
ক্ষমা করো প্রিয় আমার সকল ভুল,
কথা, কাজের ভুল, বোঝাবুঝির ভুল
এতটা ভুল, ভুল করনা প্রিয়তমা,
অনুশোচনায় মিলে যায় ক্ষমা ।
জীবনে সুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভুল,
ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়না যেনো ভুল।
আর কেঁদনা বৌ দু'জনেরই ভুল ছিলো,
দু'জনেই তাই এসে দু'জনকে জড়িয়ে নিলো।
এমন সময় শুনছে দূরের আজান,
একসাথে হেসে উঠলো চঞ্চল দুটি প্রাণ।
Comments
Post a Comment